রংপুরের পীরগাছায় ইমাম নিয়ে দ্বন্দে এক ঈদগাহ মাঠের মুসল্লীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েছেন। আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের নামাজকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত গড়ালে উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে ওই মাঠের নামাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। ফলে ওই ঈদগাহ মাঠে ঈদের জামাত নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
জানা যায়,পীরগাছা উপজেলার ইটাকুমারী, ইটাকুমারী পূর্বপাড়া, শাহপাড়া, আমতলী, জগদীশ, পঞ্চাননসহ প্রায় ১০ টি গ্রামের মুসল্লীদের নামাজের জন্য ৬টি মসজিদ রয়েছে। তবে ওই গ্রামগুলোর মুসল্লীরা একত্রে দীর্ঘদিন ধরে দুই ঈদের নামাজ ইটাকুমারী পূর্বপাড়া ঈদগাহ মাঠে আদায় করে আসছেন। পাঁচ বছর আগে জগদীশ আমতলী মসজিদের ইমাম মাওলানা শহিদুল ইসলামকে ওই ঈদগাহ মাঠের ইমাম হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই ইমামের ইমামতি করাকে কেন্দ্র করে তিন বছর পূর্বে সেখানকার মুসল্লীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েন। এক পক্ষ ওই ইমামের পরিবর্তন চান। আরেক পক্ষ ওই ইমামকে বহাল রাখতে চান। এ নিয়ে বহুবার শালিস বৈঠকের পর গত বছর স্থানীয় ইটাকুমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার দুই পক্ষের জন্য ওই মাঠেই পৃথক দুটি জামাতের ব্যবস্থা করে দিলেও সময় কম বেশিকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এবার আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের নামাজকে কেন্দ্র করে আবারও দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে এবার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন পর্যন্ত গড়ায়। উপজেলা প্রশাসন শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে দুই পক্ষকে নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করেও কোন সুরাহা করতে পারেনি। তৃতীয় পক্ষ থেকে ইমাম দেওয়ার কথা বলা হলেও একটি পক্ষ মানতে নারাজ। সর্বশেষ সোমবার (০৮ এপ্রিল) আবারও বৈঠক বসে সমাধান না হওয়ায় ঐক্যমত্যে না পৌঁছা পর্যন্ত ওই মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে ইটাকুমারী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাশার বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষকে নিয়ে সমাধানে আসার চেষ্টা করছি।
পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা। আমরা চাই উভয় পক্ষই বসে সমঝোতা করে নামাজ আদায় করুক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাজমুল হক সুমন বলেন, বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে মতানৈক্য থাকায় উভয় পক্ষকে একটা সিদ্ধান্তে আসার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। যদি এর মধ্যে দুই পক্ষ ঐক্যমতে না পৌঁছায় তাহলে উদ্ভূত পরিস্থিতি এড়াতে ওই মাঠে ঈদের জামাত বন্ধ থাকবে।