গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুরে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকা সন্দেহে নারীসহ এক জুয়ারী জনতার হাতে আটক, স্বামীর ভিটা ছেড়ে চলে যেতে হবে রায় কাউন্সিলরের, একতরফা রায়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার বিকেলে মহানগরীর ৪ নং ওয়ার্ড সারদাগঞ্জ উত্তর পাড়া কুদ্দুস নগরে মৃত মোশারফ হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে মেম্বার বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক জানান, বিকেলের দিকে আমার কাছে কয়েকটি ফোন আসে।
ফোন পেয়ে কয়েকজন মুসল্লিকে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত কুলসুম বেগম ও মিন্টুকে বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বের করি। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে এলাকায় উৎসুক মানুষের ঢল নামে। তিনি আরো জানান এর আগেও রাত বারোটার দিকে ওই নারীর কক্ষ থেকে অভিযুক্ত জুয়ারী মিন্টুকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে এই বাড়িতে আর ঢুকবে না মর্মে বের করে দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত মিন্টু কাউন্সিলর কাজী আতাউরের অনুসারী হওয়ায় কোন প্রকার শাস্তি না দিয়ে ওই নারীকে স্বামীর ভিটেবাড়ি বিক্রি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার রায় প্রদান করেন। এদিকে ঘটনার দিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যখন এলাকাবাসী তাদের বিচারের আওতায় আনার চেষ্টা করছিল, ঠিক তখনই মিন্টুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মনির হোসেন ওরফে বোটকা মনির নামের এক ব্যক্তি ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ ঘটনার বিচার করবে বলে তাকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে যায় কাউন্সিলরের অফিসে। পরে মিন্টু ও কুলসুমকে নিয়ে এক সালিশি দরবারে ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী আতাউর রহমান সিদ্ধান্ত জানায় যে, মিন্টু আর কোনো দিন কুলসুমের বাড়ির আশপাশে আসতে পারবে না। আর কুলসুমকে নিজ বাড়ি ছেড়ে ঢাকা/অন্যত্র চলে যেতে হবে। কাউন্সিলরের এমন রায়ে হতবাক এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, মিন্টুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত মনির, গফুর ওই কাউন্সিলরের মাধ্যমে এমন একতরফা রায় নিয়ে আসে।
এ ঘটনায় অসামাজিক কাজ নিয়ে মিন্টু ও কুলসুম অস্বীকার করে বলেন, আমরা দুজন একই পীরের মুরিদ, সে ক্ষেত্রে আমরা ভাইবোনও বটে। ভাইবোন হিসেবে আমার কাছে আসতেই পারে।
বুধবার সন্ধ্যায় কাউন্সিলর কাজী আতাউর রহমানের কাছে এই বিচার প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মনির নামের এক লোক তাকে ধরে নিয়ে এসেছে, পরে আমি নারীকে এলাকা ছাড়ার রায় দিয়েছি। তার ছেলে বিদেশ থেকে এলে এবং মেয়ের পরীক্ষার পরই তাদের রায় কার্যকর হবে। একই অপরাধে নারীকে কেন শাস্তি দেওয়া হলো আর অভিযুক্ত মিন্টুকে বাড়ি ছাড়ার কোনো শাস্তি দেওয়া হলো না— এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই কাউন্সিলর বলেন, এলাকাবাসীর দাবির মুখে আমি এ রায় দিয়েছি।