রংপুরের পীরগাছার পাওটানাহাট সাথী মজলিস পাবলিক লাইব্রেরি কমিটির বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় ছাত্র-জনতা।
রোববার (১৮ আগস্ট) বিকাল ৫টার দিকে পাওটানাহাট মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্থানীয় সমন্বয়ক সুমন মিয়া, ব্যবসায়ী আতোয়ার রহমান, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আনিছুর রহমান সোহেলসহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় তারা বক্তব্যে বলেন, ১৯৫২ সালে স্থানীয় নুরুল হুদা নামে এক ব্যক্তি ওই এলাকার মানুষদের বই পড়ায় আগ্রহী ও জ্ঞানচর্চার জন্য তার নিজের ১৬ শতক জমি লাইব্রেরি করার জন্য দান করেন। যা পাওটানাহাট সাথী মজলিস পাবলিক লাইব্রেরি ও সংঘ নামে পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০০৩ সালে এটি সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধন লাভ করে।
বক্তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এই লাইব্রেরি কমিটির দূর্নীতির কারনে সাধারণ মানুষ এর কোন সুবিধা পাচ্ছেন না। লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই নাই। লাইব্রেরির জায়গার মধ্যে দোকান ঘর তুলে সেগুলো ভাড়া দিয়ে কমিটির লোকজন ভোগ করছেন। জনগণকে এর আয় ব্যয় সম্পর্কে জানানো হয়না। কমিটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দুর্নীতিবাজ লোক রয়েছেন। সরকারি বরাদ্দ কি আসে না আসে তা জানানো হয়না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমিটির সভাপতি হওয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন মাঝখানে একবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত না হয়েও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
লাইব্রেরির কমিটির সভাপতি ও ছাওলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাজির হোসেন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, লাইব্রেরিটি পরিচালনার জন্য ৬৫ সদস্যের একটি কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে দল মত নির্বিশেষে সমাজের ভালো ভালো মানুষরা রয়েছেন। ওই জমিতে গভীর গর্ত ছিল। আমি নিজের টাকা দিয়ে মাটি ভরাট করে ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ দিয়ে একসময় টিনের অবকাঠামো করে দিয়েছিলাম। পরে তা নষ্ট হয়ে হয়ে যায়। এই জমি একসময় বেহাত হতে ধরেছিল। আমরা তা উদ্ধার করেছি। দোকান যেগুলো ভাড়া দেয়া আছে সেগুলোর টাকা দিয়ে বর্তমানে সেখানে টিনশেড পাকা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই রয়েছে, প্রতিদিন ৩টা করে পত্রিকা নেয়া হয়। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আমি চেয়ারম্যান ছিলামনা। সে সময় এর কার্যক্রম তেমন একটা ছিলনা। বর্তমানে আমরা ১৫ লক্ষ টাকার সরকারি বরাদ্দ পেয়েছি। এটা দিয়ে ও দোকানগুলোর সিকিউরিটি বাড়িয়ে নিয়ে এখানে চারতলা ভিত্তি বিশিষ্ট ভবন নির্মান করা হবে।
তিনি আরও বলেন, এই লাইব্রেরি নিয়ে একটা কুচক্রী মহল দীর্ঘদিন থেকে ষড়যন্ত্র করে আসছে। তারই অংশ হিসেবে গতকাল (শনিবার) তারা লাইব্রেরিতে সুধী সমাবেশে এসে বিশৃঙ্খলা করেছে। আজ (রোববার) আবার মানববন্ধন করেছে।