হাতিমারা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাসিমা ইয়াসমিন সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের অর্থ কেলেঙ্কারির অভিযোগ ও ছাত্র আন্দোলনের চাপে পদত্যাগ করেছেন। এই পদত্যাগ শিক্ষার্থীদের একটানা ক্লাস বর্জন এবং আন্দোলনের ফলাফল হিসেবে এসেছে, যেখানে তাদের দাবি ছিল অধ্যক্ষের পদত্যাগ এবং অর্থ দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত। অধ্যক্ষের পদত্যাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে।
অধ্যক্ষ নাসিমা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানের তহবিলের বিপুল অঙ্কের অর্থ অবৈধভাবে নিজের কাজে ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলেন তিনি। এছাড়া, বিভিন্ন খাতে অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব দেখা গেছে, যা শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে ক্লাস বর্জন এবং প্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভে অভিভাবকরাও একাত্মতা প্রকাশ করেন এবং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন জানান।
এমন পরিস্থিতিতে অধ্যক্ষ নাসিমা ইয়াসমিন নিজের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “প্রতিষ্ঠানের ভালো ও শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করেই আমি এই পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছি।” তিনি আরও জানান, এই পদক্ষেপ তার ব্যক্তিগত ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং শিক্ষার্থীদের চাপ ও দাবি মেনে নেওয়ার জন্যই পদত্যাগ করেছেন।
অধ্যক্ষের পদত্যাগে শিক্ষার্থীরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, “অধ্যক্ষের পদত্যাগ আমাদের আন্দোলনের প্রথম সফলতা। আমরা চাই যারা দুর্নীতির সাথে জড়িত, তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক।” অভিভাবকরাও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এক অভিভাবক বলেন, “আমরা চাই আমাদের সন্তানেরা সঠিক শিক্ষার পরিবেশে পড়াশোনা করুক। যারা এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”
শিক্ষকরাও অধ্যক্ষের পদত্যাগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি একটি নতুন সূচনা পাবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে। এক শিক্ষক বলেন, “অধ্যক্ষের পদত্যাগের মাধ্যমে আমরা নতুনভাবে এগিয়ে যেতে পারবো। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেভাবে সচেতনতা এসেছে, তা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক।”
এই পদত্যাগের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি একটি নৈতিক বিজয় অর্জন করেছে, তবে এখনো প্রতিষ্ঠানটির সুনাম পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।