গত ইং ২৭/০৪/২০২৩ তারিখ বেলা অনুমান ১২.৩০ ঘটিকায় সদর থানাধীন দক্ষিণ ছায়াবিথী সাকিনস্থ ফণিরটেক এলাকার নিরিবিলি মাঠের পূর্ব পাশে ধানক্ষেতের কাছে ১৮-২০ বছর বয়সের ০১ (এক) টি ছেলের লাশ পাওয়া যায়। সংবাদ পেয়ে সদর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। লাশের হাত, পা, গলা, মুখ কাপড় দিয়ে বাঁধা এবং মুখমন্ড সহ লাশের সারা শরীরে কাটা রক্তাক্ত জখম থাকায় লাশের পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় পরিচয় উদঘাটনের জন্য উপস্থিত লোকজন সহ আশেপাশের লোকজনদের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরবর্তীতে লাশের পরিচয় পাওয়া যায় যে সদর থানাধীন ছোট দেওড়া সাকিনস্থ মোঃ সফিকুল ইসলাম (৬৪) এর ছোট ছেলে সিয়াম (২০) বলে শনাক্ত করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে সদর থানার মামলা নং ৩৯, তাং ২৮/০৪/২০২৩ ইং, ধারা-৩০২/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়। ঘটনার পর-পরই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ মনিরুজ্জামানসহ সদর থানার একাধিক টিম জনাব রেজওয়ান আহমেদ, পিপিএম অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার, অপরাধ (উত্তর) বিভাগ এর নেতৃত্বে আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান, উপ-পুলিশ কমিশনার অপরাধ (উত্তর) বিভাগ এর নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে ঘটনার ৭২ ঘন্টার মধ্যে ক্লুলেস এ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে। সরাসরি হত্যায় জড়িত অর্পন সরকার জয় (১৬) কে সদর থানাধীন দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকা থেকে ২৯-০৪-২০২৩ তারিখ গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত অর্পনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আফিফা (ছদ্মনাম) একটি মেয়ের সাথে ঘটনার মুল পরিপকল্পানাকারী এবং হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণকারী পলাতক আসামী মোঃ আরাফাত (২০) এর দীর্ঘদিন যাবৎ প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার ৫ দিন আগে আফিফা (ছদ্মনাম) এর আত্মীয়ের বাড়ী সদর থানাধীন ছোট দেওড়া এলাকায় তার বান্ধবীদের সাথে ঘুরতে গেলে নিহত সিয়াম এর সাথে পরিচয় হয়। তারা নিজেদের মধ্যে ফেসবুক আইডি বিনিময় করে এবং পরবর্তীতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে চ্যাট চলতে থাকে। অন্যদিকে ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারী আফিফা (ছদ্মনাম) এর প্রেমিক আরাফাত তার প্রেমিকার ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার আইডি তার মোবাইলে লগইন করে রাখে এতে করে প্রেমিকা আফিফা (ছদ্মনাম) ম্যাসেঞ্জার আইডি দ্বারা যাদের সাথে কথোপকথন বা চ্যাট করতো তার বিস্তারিত আরাফাত এর নিজের মোবাইলে দেখতে পেত। এতে আসামী আরাফাত এর চরম ক্ষোভ/আক্রোশ জমতে থাকে এবং পরিকল্পনা করে সিয়ামকে মেরে ফেলার। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৬-০৪-২০২৩ তারিখ রাত্রী আনুমানিক ১৯:৩০ ঘটিকার সময় নিহত সিয়ামকে কৌশলে আফিফা (ছদ্মনাম) এর ম্যাসেঞ্জার আইডি থেকে আরাফাত নিজেই তার পরিচয় গোপন করে আফিফা (ছদ্মনাম) সেজে নিহত সিয়াম এর সাথে চ্যাট করে এবং ঘটনাস্থলে এসে তার সাথে দেখা করতে বলে। সদ্য পরিচয় এবং নিজের ভাললাগা থেকে নিহত সিয়াম দেখা করার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে উল্লিখিত ঘটনাস্থলে আসলে, আগে থেকে অবস্থান নেয় আরাফাতের গ্যাং বাহিনী । হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী পলাতক আরাফাত (২০) সহ (১০/১৫) জনের একটি গ্রুপ (তদন্তের স্বার্থে যাদের নাম পরিচয় আপতত প্রকাশ করা গেল না) আরাফাত এর নির্দেশে তার হাত পা বেধে এলোপাতাড়ি ভাবে চাপাতি, সুইচ গিয়ার চাকু ও ছেন দিয়ে কোপাতে থাকে। পরবর্তীতে সিয়াম এর মৃত্যু নিশ্চিত হলে যে যার মত চলে যায়। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে হত্যাকারীরাও উপস্থিত উৎসুক জনতার সাথে মিশে ঘটনাস্থলের সকল কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে। পুলিশ প্রথম অর্পণ সরকার জয়কে (১৬) গত ২৯-০৪-২০২৩ তারিখ সদর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে এবং উক্ত আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে ফৌ: কা: ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরবর্তীতে ১। মোঃ সাজ্জাদ হোসেন @ সাজিদ (১৫), ২। মো: হাসিবুর রহমান টুটুল (২১), ৩। রিয়াদ হোসেন মুন্না (১৮)কে ৩০-০৪-২০২৩ তারিখ দক্ষিণ ছায়াবিথী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ৪। মোঃ শাকিল (১৯), ৫। মোঃ রাকিব (২২)দ্বয়কে বাঙ্গালগাছ এলাকা থেকে ০৬-০৫-২০২৩ তারিখ গ্রেফতার করা হয়। এছাড়াও ঘটনার সহিত যাকে কেন্দ্র করে ঘটনাটি ঘটেছে সেই প্রেমিকা আফিফা (ছদ্মনাম) ফৌ: কা: ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বাক্ষী হিসাবে বিজ্ঞ আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং অপর পলাতক আসামীদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা অব্যাহত আছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের নাম ঠিকানা :- (১) অর্পণ সরকার জয় (১৬), পিতা-শ্রী অজয় কুমার সরকার, মাতা-মাধুবী সরকার, সাং-মাদববাড়ী, (২) মো: সাজ্জাদ হোসেন @ সাজিদ (১৫), পিতা-হাসান জামান, মাতা-নুরুন্নাহার, সাং-দক্ষিণ ছায়াবিথী, উভয়ের-থানা-সদর, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর (৩) মো: হাসিবুর রহমান টুটুল (২১), পিতা-মো: মোশারফ হোসেন, মাতা-মোছাঃ হোসনে আরা, সাং-কেন্দুয়াকালিয়াবাড়ী, থানা ও জেলা-জামালপুর, বর্তমানে-সাং-দক্ষিণ ছায়াবিথী(বাদলের বাড়ীর ভাড়াটিয়া), (৪) রিয়াদ হোসেন মুন্না (১৮), পিতা-মোস্তফা কামাল, মাতা-কহিনুর আক্তার মনি, সাং-দক্ষিণ ছায়াবিথী ফনির টেক, থানা-সদর, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর (৫) মোঃ শাকিল (১৯), পিতা-মোঃ সাইফুল ইসলাম, মাতা-মোছাঃ সালমা বেগম, সাং-ব্রাম্মনপাড়া, থানা-মেলান্দহ, জেলা-জামালপুর বর্তমানে সাং-দক্ষিণ ছায়াবিথী, থানা-সদর, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর এবং ৬। মোঃ রাকিব (২২), পিতা-মোঃ ইউনুস আলী, মাতা-রানু বেগম, সাং-বাঙ্গালগাছ, থানা-সদর, গাজীপুর মহানগর, গাজীপুর।